Friday, November 4, 2022

ভারতের সাথেই কেন বারবার বাংলাদেশের এমন হয়?

 ভারতের সাথেই কেন বারবার বাংলাদেশের এমন হয়?


একটা ক্রিকেট ম্যাচে যা থাকা দরকার সবটুকুই ছিলো ২ নভেম্বর বাংলাদেশ এবং ভারতের ম্যাচে। অনেকেই বলেন, যেখানে নেদারল্যান্ডস এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ শেষ মুহূর্তে কোনোমতে জিতে! সেখানে ভারত-পাকিনস্তানের সাথে কিভাবে জিতবে?



প্রথমত, এই শ্রেণির লোকদের জন্য বুধবারের ম্যাচ একটা শিক্ষা। এই ম্যাচটা হারার জন্য যদি তর্ক হয়, সেখানে দুটা বিষয় নিয়ে তর্ক হতে পারে। একটা অনিয়ম, অসহযোগিতা, পক্ষপাত। অন্যটি হলো, আমাদের ক্রিকেটারদের ব্যর্থতা।


প্রতিবারই এই ব্যর্থতা নিয়ে আমরা আলাপ করি, আলোচনা-সমালোচনা করি। এবারও সেই আলোচনা-সমালোচনার বিস্তর জায়গা রয়েছে; কিন্তু আজ আমি সেই বিস্তর ক্ষেত্রটা সিলেক্ট করবো না। আমার কাছে সবকিছু ছাপিয়ে 'অনিয়ম'কেই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে।


প্রথমতঃ এই ম্যাচে বাংলাদেশ যখন ৭ ওভারে ৬৬ রান তুলে ফেলেছিল, তখন বৃষ্টি শুরু হয়। ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের পক্ষে ছিলো খেলা। কিন্তু এর মধ্যেই হলো একটা অনিয়ম। ফেইক থ্রো করার পরও মেলেনি পেনাল্টি রান।


সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেলো, অক্ষর প্যাটেলের করা ইনিংসের সপ্তম ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে ঘটে ওই ঘটনা। সীমানা থেকে আর্শদিপ সিংয়ের থ্রোয়ে বিরাট কোহলিকে দেখা গেছে বল না ধরেও থ্রো করার ভান করেছেন। ভিডিও ক্লিপ দেখে এটিকে পরিষ্কার ফেক ফিল্ডিং বলেছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরাও।


উইকেটে থাকা ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত তাৎক্ষণিক অভিযোগ করেছিলেন আম্পায়ারের কাছে। তবে আম্পায়ার তাকে জানান, এরকম কিছু তাদের চোখে পড়েনি। যদিও ভিডিও রিপ্লাইয়ে দেখা গেছে, লেগ আম্পায়ারের খুব কাছেই ছিলেন কোহলি। এতো কাছে থেকেও কেন এসব দেখেন না তারা এবং পরবর্তীতে সেটা কেন যাছাই করেন না? তা বোধগম্য নয় আমার। এই ৫টি পেনাল্টি রান পেলে জয়টা নিশ্চয় বাংলাদেশেরই হতো!


এরপর আসা যাক, ভেজা আউটফিল্ড নিয়ে। বৃষ্টিতে ৫২ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর তড়িঘড়ি করে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিলেন আম্পায়াররা। অথচ আউটফিল্ড পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত কখনও খেলা শুরু করতে দেখা যায় না।

আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মত এতোবড় একটা আসরে এমন কান্ডও ঘটে! বড় বিষয় হচ্ছে, বৃষ্টি থামার ৭/৮ মিনিটের মাথায় মাঠে নামতে হয়েছিল দু' দলকে। অথচ, সেখানে অন্তত ২০ মিনিট পর সাধারণত মাঠে নামে ক্রিকেটাররা। কারণ এর আগ পর্যন্ত মাঠ শুকানোর কাজ করতে হয়।


টিভি পর্দায় দেখা গেলো, আম্পায়াররা যখন ডিএলএস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের নতুন লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিলেন তখন ড্রেসিংরুমের সামনে আম্পায়ারদের সঙ্গে কথা বলছেন সাকিব, সেখানে উপস্থিত ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। আম্পায়ারদের সঙ্গে কথাবার্তায় সাকিব অসন্তুষ্ট হলেও তাদের না খেলে কোনো উপায় ছিলো না। এ যেন ভারতের জন্য সুবিধার আর সহযোগিতা দিতে ব্যস্ত আম্পায়াররা এবং আইসিসিও।


এরপর আসা যাক, ডিএল মেথড নিয়ে। ৫২ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর মাত্র ৪ ওভার কমানোর সিদ্ধান্ত কিভাবে নেয় আম্পায়াররা? সেটাও বড় প্রশ্ন। বৃষ্টির শুরুর পর যে সময় অতিবাহিত হয়েছে, তাতে নিয়ম অনুযায়ী যেখানে ৬ থেকে ৮ ওভার কার্টেল করে ১২ কিংবা ১৪ ওভার খেলা হওয়ার দেওয়ার নিয়ম, সেখানে তারা ভারতের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়ে ১৬ ওভার খেলিয়েছে বাংলাদেশকে।


এসব নিয়ে বাংলাদেশের কোনো ধরনের মন্তব্য শুনেনি আম্পায়াররা। শুধু কি তাই! বিরাট কোহলি মাঠে বারবার আম্পায়ারদের উপর যেভাবে প্রভাব খাটাচ্ছিলেন এবং আম্পায়াররা যেভাবে বিরাটের কথা গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত দিচ্ছিলেন, সেটাও বড় প্রশ্নবিদ্ধ।

0 comments:

Post a Comment